মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * আর্থিক খাতে সংস্কার অব্যাহত থাকবে : অর্থ উপদেষ্টা   * স্বৈরাচারের দোসরদের যড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকুন : তারেক রহমান   * বিএনপি মহাসচিবের সাথে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের বৈঠক   * ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের নতুন ডিসি মুহাম্মদ তালেবুর রহমান   * তিন সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুতের লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতির আশা উপদেষ্টার   * আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিবেন না : প্রধান উপদেষ্টা   * নড়াইলে মাশরাফিসহ ৯০ জনের নামে মামলা   * পোশাক শ্রমিকদের বকেয়া বেতন বৃহস্পতিবারের মধ্যে পরিশোধ   * সংস্কারের জন্য প্রাথমিকভাবে ৬টি কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি : প্রধান উপদেষ্টা   * ডেঙ্গুতে আরও তিনজনের মৃত্যু, আক্রন্ত ৪০৩ জন  

   কৃষি সংবাদ
বোরোর বাম্পার ফলন ঝড়বৃষ্টির আগেই ঘরে তোলার চেষ্টায় কৃষক
  Date : 28-04-2019

অনলাইন ডেস্ক :

বোরোর বাম্পার ফলনে ভরে গেছের কৃষকের মাঠ। দেশজুড়েই মাঠজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সোনালি ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। কৃষক এখন ওই সোনালী ফলন ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। আবহাওয়া ভাল থাকায় কৃষি জমি থেকে ধান কাটা উৎসবে মেতেছে সবাই। দেশে এবার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ। ইতিমধ্যে মাঠের ৯০ শতাংশেরও বেশি ধান পেকে গেছে। এখন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়িয়ে কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত চাষীরা। ইতিমধ্যেই অনেক জায়গায় ধান কাটা শুরু হলেও কোথাও কোথাও শুরু হয়নি। কোথাও আবার রয়েছে শ্রমিক সঙ্কটও। পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়েও কৃষকদের মনে শঙ্কা বিরাজ করছে। যে কোন সময় শিলা বৃষ্টি বা ঝড় ধানের ক্ষতিতে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে যেতে পারে। তাই তো তীব্র দাবদাহের মধ্যেও  গ্রামের মানুষ ঘরে নেই। শিশু-কিশোর থেকে বৃদ্ধ সবাই দাবদাহ উপেক্ষা করে বোরো ধান ঘরে তুলতে মাঠে কাজ করছে। আর দিন-রাত সমানতালে কাজ চলছে। কৃষকদের কামনা আআরো কয়েকটা দিন রৌদ্রোজ্জ্বল থাকুক। তা নাহলে বোরোর পুরো ফলন ঘরে উঠানো যাবে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারের নানামুখী উদ্যোগে দেশজুড়েই বোরো উৎপাদনের আওতা বেড়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন জাতগুলোকে ৩ বছরের মধ্যে একটি কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মাঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাতে কৃষকরা চাষাবাদের মাধ্যমে ভাল ফলন পাচ্ছে। এবার বোরো আবাদের জন্য জমির পরিমাণ ধরা হয়েছিল ৪৮ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তা ছিল ৪৭ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর। কিন্তু এবার প্রায় ৪৯ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। আর এ বছর সরকার বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এক কোটি ৯৬ লাখ ২৩ হাজার টন। এখন পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে যে ফলন দেখা যাচ্ছে তাতে আশা করা যায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি ফলন পাওয়া যাবে। তবে ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। ধানের উপযুক্ত মূল্য না হলে আগামীতে ধান চাষ ব্যাহত হবে বলে মনে করছেন তারা।
সূত্র জানায়, দেশের হাওড়াঞ্চলে প্রতি বছরই উৎসবের মাধ্যমে ধান কাটা হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। পরিস্থিতি সামাল দিতে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে বালু পাথর কোয়ারির শ্রমিকদের ধান কাটার কাজে সহায়তা করার আহŸান জানানো হয়েছে। হাওড়গুলোতে এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। হাওড়জুড়ে এখন শুধু পাকা ধানের রঙিন ঝিলিক আর ম ম ঘ্রাণ। ধানের এমন ফলনে খুশি কৃষকরা। প্রচÐ দাবদাহেও কণ্ঠে ভাটিয়ালি গান ধরে ধান কাটছেন কৃষকরা। বসে নেই নারীরাও। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে ধান তোলার ব্যস্ততা। এখন পর্যন্ত হাওড়ে ৪০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। আশা করা যায় মে মাসের প্রথম সপ্তাহে হাওড়ে সব ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে।
সূত্র আরো জানায়, হাওড়াঞ্চলের কোথাও কোথাও  এ বছর বোরো (ব্রি ধান-২৮ জাতের) ধানে চিটা হওয়ায় ফসলে ক্ষতি হয়েছে। নেত্রকোনা জেলার পাঁচটি হাওড় উপজেলাসহ ১০টি উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করা হয় ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৫২ হেক্টর জমি। শেষ পর্যন্ত আবাদ করা হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি। কিন্তু এ বছর পাহাড়ী ঢল ও আগাম বন্যা দেখা না দিলেও মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপুতা হাওড়, শনির হাওড়, তেঁতুলিয়া, গাগলাজুর, সুয়াইর, হাটনাইয়া, আদর্শনগর, খালিয়াজুরী উপজেলার চাকুয়া, জগন্নাথপুর, পাংগাসিয়া, কির্তনখোলা, কটিচাপরা, সেনের বিল, জালর বন, সোনাতোলা, বল্লীর চৌতরা, জগন্নাথপুরের বড় হাওড়, বাজোয়াইল, পাঁচহাট, নগর, বোয়ালী, মদন উপজেলার মাঘান, হাওড়সহ বিভিন্ন হাওরে ধানে ব্যাপক চিটা দেখা দিয়েছে। উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের মতে, এটা শীতজনিত সমস্যা। খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ, মদন এবং কলমাকান্দা উপজেলার হাওড়াঞ্চলের প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়েছে। বিষয়টি সরকারের উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তাছাড়া কোথাও কোথাও নতুন ধানের বাজার মূল্য কম থাকায় হতাশ কৃষকরা। কারণ বিদ্যমান দামে কৃষকের উৎপাদন ব্যয়ও উঠবে না। বর্তমানে কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের হাওর এলাকা থেকে প্রতিদিন ভৈরব বাজারে হাজার হাজার মণ নতুন ধান আসছে। তবে দাম খুবই কম। ভৈরববাজারে প্রতিমণ মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা। তবে চিকন ধানের বাজার দর ৫০০ টাকা। কৃষকরা বলছেন, প্রতিমণ ধান উৎপাদনে ব্যয় হয়েছে ৬০০-৬৫০ টাকা। বর্তমান বাজার দরে ধান বিক্রি করে কৃষকরা লোকসানে পড়ছে। পাশাপাশি তীব্র শ্রমিক সঙ্কটের কারণে বর্তমানে ধান কাটতে দিনমজুরের প্রতিদিনের মজুরি দিতে হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা।
এদিকে আড়তদাররা বলছেন, প্রতি বছরই বৈশাখ মাসে নতুন ধানের দাম কমই থাকে। কারণ এখন আমদানি করা ধান আধা শুকনা ও ভেজা। পুরোপুরি শুকনা ধান এখনো আমদানি শুরু হয়নি। কৃষকরা জমিতে ধান কাটার পর আধা শুকনা ধান বিক্রি করতে বাজারে নিয়ে আসছে। তাছাড়া আশপাশের রাইস মিলগুলো এখনো পুরোপুরি চালু হয়নি। সরকারি গুদামগুলোও নতুন ধান কেনা শুরু করেনি। মে-জুন মাসে সরকার নতুন ধান কেনা শুরু করলে ধানের দাম আরো বাড়বে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজার দর কম থাকাটা দুঃখজনক।
অন্যদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা কোন কোন স্থানে বোরো চাষীদের দ্রæত ধান কাটার জন্য আগাম সতর্কতামূলক পরামর্শ দিচ্ছে। মূলত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পাকা ধানের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে কৃষকদের সাবধান করতেই এমন পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কারণ বিগত ২০১৭ সালে আগাম বন্যায় কৃষকরা লোকসান গুনেছিল। অবশ্য বাম্পার ফলন হওয়াতে পরের বছরই ওই লোকসান অনেকটাই কেটে যায়। এবারও ভাল ফলন হবে শুরু থেকেই আশায় বুক বেঁধেছিল কৃষকরা। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকেও বোরো আবাদে কৃষকদের নানা পরামর্শ সহায়তা দেয়া হয়। যার সুফল হলো এই ফলন। সরকার ফলন বৃদ্ধিতে যে বার্তা দিচ্ছে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের কৃষকের কাছে সেই বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। বর্তমানে দেশের কিছু কিছু জায়গায় অল্প করে হলেও বৃষ্টি হচ্ছে। মে মাসে একটি নি¤œচাপ আছে। যা ইতোমধ্যেই গভীর নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা আছে। তাছাড়া আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী মে মাসের প্রথম দিকে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে।
এ প্রসঙ্গে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ নাসিরুজ্জামান জানান, এবার বোরো উৎপাদনের আবহাওয়া খুবই ভাল ছিল। না একটু কম, না একটু বেশি। সব দিক থেকে এমন পারফেক্ট আবহাওয়া পাওয়া যায় না। এবার খুবই ভালো ছিল। এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। সেখান থেকে ১ কোটি ৯৬ লাখ টন চাল সংগ্রহ হবে। যদিও ঠাÐার কারণে কিছু এলাকায় আবাদকৃত ধানের ভেতরে চিটা হয়েছে। তবে তকাতে সার্বিক উৎপাদনে কোন প্রভাব ফেলবে না।



  
  সর্বশেষ
আর্থিক খাতে সংস্কার অব্যাহত থাকবে : অর্থ উপদেষ্টা
বেরিয়ে এলো অভিনেত্রী হিমুর মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর তথ্য
স্বৈরাচারের দোসরদের যড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকুন : তারেক রহমান
বিএনপি মহাসচিবের সাথে অস্ট্রেলিয়ার ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের বৈঠক

সম্পাদক : স্মৃতি ভূষণ ভট্টাচার্য্য (স্মৃতিময়)
সম্পাদক কর্তৃক ১১২/২-এ পূর্ব বাসাবো, ঢাকা থেকে প্রকাশিত। তুহিন প্রেস ২১৯/২, ফকিরাপুল (১ম গলি) মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২/২, ইডেন কমপ্লেক্স, (৪র্থ তলা) সার্কুলার রোড, মতিঝিল, ঢাকা-১০০০ ।
ফোন: ০২-৪১০৭০৪৫৬, মোবাইল: ০১৭৯৮-৪৬৬৪৭১।
E-Mail: dainikdhaka5@gmail.com, dailydhaka2003@gmail.com